ঠিক যেন মনুয়া কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি, গাইঘাটায় স্ত্রী এবং তাঁর প্রেমিকের ষড়যন্ত্রের স্বীকার হলেন স্বামী।প্রেমিকের সাথে মিলে স্বামীকে খুনের অপরাধে ধরা পড়েছেন স্ত্রী এবং তার প্রেমিক।
কয়েক বছর আগে মনুয়া কান্ডের ছবিটাও ঠিক এইরকমই ছিল।
স্বামীকে খুন করে আড়াই ফুট বাই দু’ফুটের ছোট্ট গর্তে রক্তাক্ত দেহটা ঢোকানোর জন্য হাড়-পাঁজরা, হাত-পা ভেঙে কোনও রকমে গর্তে ভরে তার উপরে মাটি চাপা দিয়ে তারও উপরে খাট-বিছানা পেতে সারা রাত প্রেমিকের সাথে শুয়ে ছিলেন নিহত যুবকের স্ত্রী।
গাইঘাটার গোয়ালবাথান এলাকার এই ঘটনায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। নিহত ব্যক্তির নাম রামকৃষ্ণ সরকার (৪০),তাঁর স্ত্রীর নাম স্বপ্না সরকার এবং স্ত্রীয়ের প্রেমিকের নাম সুজিত দাসকে। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে।
বুধবার ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন সেই গর্ত খুঁড়ে নিহতের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আগে থেকেই প্ল্যান মাফিক এই খুন করেছেন স্বপ্না এবং সুজিত। রামকৃষ্ণকে মাথায় ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করে মারা হয়। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
রামকৃষ্ণর বনগাঁর কুড়িরমাঠ এলাকায় পাঁচ ও ন’বছরের দুই ছেলে এবং স্ত্রীয়ের সাথে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন বলে জানা গেছে। শৌচালয়ের চেম্বার পরিষ্কারের কাজ করতেন তিনি। স্বপ্নার সাথে সুজিতের আলাপ মোবাইলে মিসড কলের মাধ্যমে, আলাপ থেকে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে বেশি সময় লাগেনি। গাইঘাটারই গোয়ালবাথান এলাকায় থাকে সুজিত ।প্রেমিকার সাথে দেখা করতে তাকে ধর্মবোন পাতায় সুজিত, প্রায়ই রামকৃষ্ণদের বাড়িতে যেত সে।
ঘটনা জানাজানি হতেই শুরু হয় অশান্তি। বেশ কিছুদিন ধরেই রামকৃষ্ণকে খুনের প্ল্যান করে স্বপ্না-সুজিত। সোমবার ঠাকুর দেখার বাহানায় স্বপ্না স্বামী এবং ছোট ছেলেকে নিয়ে সুজিতের বাড়িতে যায়। সুজিত রামকৃষ্ণকে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায় মদ খাওয়াবে বলে। দু’জনে মদ্যপান করে, তারপর নেশাগ্রস্ত রামকৃষ্ণকে মোটা কাঠের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে সুজিত। রামকৃষ্ণ মারা গেলে বাঁশবাগানের কাছে পুকুরের পাশে রাত ১০ টা নাগাদ স্বপ্নার সাথে মিলে দেহ গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দেয়।
পেশায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে সুজিত দু’বার বিয়ে করে কিন্তু দুই স্ত্রীই তাকে ছেড়ে চলে যায়। তার বাড়িতে আছে মা ও বোন।
মঙ্গলবার সকালে পুকুর পাড়ে রক্তের দাগ দেখা যায়, এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ খোঁজাখুঁজি কিছু পাননি। বুধবার সকালে সুজিতের ঘর থেকে গন্ধ পেয়ে এলাকাবাসী পুনরায় পুলিশকে ডাকে, গাইঘাটা থানার ওসি বলাই ঘোষ সুজিতের ঘরে গিয়ে মাটি খুঁড়তেই দেহ পাওয়া যায়।