করোনা পরিস্থিতিতে এবছর পুজো হলেও অত্যধিক ভিড়ে পুজোমন্ডপে সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, তাই একাধিক বিধি নিষেধ মেনে চলার কথা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনার জন্য যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরী হয়েছে তা যাতে পুজো তে বাঁধা না হয় সেজন্য রাজ্যের প্রায় ৩৭ হাজার পুজো কমিটির প্রত্যেককে মুখ্যমন্ত্রী ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে
পুজো কমিটির প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রীর জানান করোনার কঠিন পরিস্থিতিতে অনেকেই স্পনসর না পাওয়ায় বিজ্ঞাপন পাবেন না।
তাই পুজোতে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সুষ্ঠভাবে পুজো করা যায় সেই কারণেই অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য বছরের মতো এবছর নেওয়া হবে না দমকল, পুর প্রশাসন বা পঞ্চায়েত ফি, ৫০ শতাংশ ফি মুকুব করবে সিইএসসি এবং রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম। এছাড়াও এবার অনলাইনেও দেওয়া হবে পুজোর অনুমতি।
তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি এই বিষয় গুলোকে কটাক্ষের সুরে ভোটের পূর্বে রাজনীতি বলেই দেখছেন। তার প্রশ্ন ওই টাকা পাবেন,সেটা কী ভাবে নির্বাচিত করবেন তারা ? অভিযোগের সুরে তিনি বলেন আসলে টাকাগুলো যাবে ক্যাডারদের উন্নয়ন তহবিলে, তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ রাই পাবে টাকা, সামনে ভোট আসছে সে কারণেই এসব।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির উদ্দেশ্যে বলেন পুজো না হলেও চিৎকার করবে আবার পুজো করলে সংক্রমণ বেড়ে গেলে সব দোষ পুজোকে দেবে। তিনি জানান ইদ যেমন বন্ধ হয়নি, পুজোও বন্ধ হবে না।
এই বক্তব্যের জবাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ মন্তব্য করেন পুজো নিয়ে এই সরকারের ইতিবাচক দিক তিনি কোনদিন দেখেন নি । বিজেপির ভয়ে সরকারের এত প্রতিশ্রুতি।
এবছর পুজোতে ছাড়পত্র মিললেও বহু বিধিনিষেধ এর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, তিনি বলেছেন রেড রোডে এবছর হবে না পুজো কার্নিভাল।
প্যান্ডেল রাখতে হবে খোলামেলা৷ প্যান্ডেলের ভিতরে গোল দাগ করে বজায় রাখতে হবে দূরত্ব বিধি।
শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার কথা প্যান্ডেলে বারবার ঘোষণা করতে হবে, প্রবেশপথ এবং বেরোনোর রাস্তা হবে আলাদা, সঙ্গে অবশ্যই রাখতে হবে স্যানিটাইজ়ার ও মাস্ক
স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ বেশি করতে হবে, তাদের ফেস শিল্ড থাকবে, অঞ্জলি দেওয়া এবং সিঁদুর খেলা তিনটি দফায় হবে
এবছর কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না
দুপুরের মধ্যে পুরস্কার-কমিটি কে আসতে হবে
আলাদা আলাদা দিনে এলাকা অনুযায়ী বিসর্জন দিতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন পুজো কমিটিকে স্যানিটাইজ়ার এর পাশাপাশি অতিরিক্ত মাস্ক রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ অনেক গরীব মানুষের মাস্ক কেনার সামর্থ্য নেই,তারা যখন মণ্ডপে ঢুকবে তাদের মাস্ক দিতে হবে।
ভিড় যাতে কম হয় সেজন্য এ বার তৃতীয়া থেকে একাদশী পর্যন্ত প্রতিমা দর্শনের সুবিধা থাকবে রাতে৷ তৃতীয়ার রাত থেকেই পথে পুলিশদের থাকতে হবে।
এবছর ভার্চুয়াল পুজো দেখে বিশ্ব বাংলা পুরস্কারের ঘোষণা করবে।