৪৫০ বছর ধরে চলে আসছে
ঐতিহ্য সমৃদ্ধ শ্রীরামপুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো বর্তমানে জাঁকজমকপূর্ণ না হলেও মায়ের পুজো হয় নিষ্ঠা সহকারে
শ্রীরামপুর রাজবাড়ির সেই বিশাল ব্যাপার, রাজকোষ, প্রতিপত্তি এখন না থাকলেও বজায় আছে নিষ্ঠা সহকারে দুর্গা পুজো।
কিভাবে শুরু হয় এই পুজো, তা দেখতে গেলে পিছিয়ে যেতে হয় অতীতের পাতায়, যখন পাটুলির বৈষ্ণব ব্রাহ্মণ লক্ষ্মণ চক্রবর্তীকে শ্রীরামপুরের গঙ্গার তীরবর্তী বিশাল জমি, প্রাসাদের ন্যায় বাড়ি দেন শেওড়াফুলির রাজ পরিবারের রাজা, বিনিময় মূল্য ছিল একটি মাত্র স্বর্ণ মুদ্রা।
দানে পাওয়া এই বাড়ি হয়ে ওঠে শ্রীরামপুর রাজবাড়ি। এই বাড়িতে বংশপরম্পরায় রাজত্ব করেছেন লক্ষ্মণ চক্রবর্তী, রঘুরাম গোস্বামী থেকে আরও অনেকে।
বিশালাকার এই রাজবাড়ির চারিদিকে এবং বিশালাকার থাম, বৃহৎ দালান এর ঐতিহ্য।
তবে আগে দালানের জায়গায় ছিল পুকুর, সেই পুকুরে ডুবে পরিবারের এক সদস্য মারা যাওয়ায় পুকুর বুঝিয়ে তৈরী হয় নাটমন্দির।
একসময়ে দুর্গাপুজো বিশাল আয়োজন হত এই রাজবাড়িতে। ধুমধাম করে হতো মায়ের পুজো, শতাধিক মানুষ আসত৷ তাদের খাওয়ানো হতো। আগের মতো ধুমধাম করে এখন আর পুজো হয়না ঠিকই তবে এখনো পুজোয় সমস্ত আচার নিয়ম নিষ্ঠা মেনে চলা হয়।
বিসর্জনের আগের দিন বাড়ির এয়োস্ত্রীরা ইলিশ মাছ, পান্তাভাত ও পান খেয়ে বরন করেন মা কে।সকলে মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলায়। তারপর গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হয় মাকে।
৪৫০ বছরের পুরোনা এই পুজো যখন বড় করে হতো তখন পুজোর সমস্ত ব্যয়ভার নেওয়া হত রাজ কোষ থেকে, কিন্তু এখন আর অবস্থা তেমন না থাকায় বাড়ির বিভিন্ন ঘরের ভাড়া থেকে নেওয়া হয় পুজোর খরচ।
এই রাজবাড়িতে বহু সিনেমার শুটিং ও দেখা গেছে। বাংলা সিনেমা ‘ভুতের ভবিষ্যত’ এর শুটিং ও হয়েছে এই রাজবাড়িটিতে।
ঐতিহ্যমন্ডিত এই রাজবাড়ির পুজোয় একসময় উপস্থিত থাকতেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস এবং আরও বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী।