বাড়ির চারজনেই করোনা আক্রান্ত। তবে তিনজনের দেহে উপসর্গ না মিললেও উপসর্গ মেলে বাড়ির গৃহবধুর শরীরে। আক্রান্তকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বাড়িতে হাজির হয় পুরসভার কর্মীরা। আর ঠিক তখন ই ওই মহিলার স্বামীর করুন আর্তি,” দাদা আপনারা প্লিজ ওনাকে নিয়ে যাবেননা। আপনারা তো একজনকে নিয়ে যেতে চান। তো ওকে বাদে যাকে খুশি নিয়ে যান। কিন্তু দয়া করে ওনাকে নেবেন না।” আর এই ঘটনায় রীতিমত চক্ষু চড়কগাছ ওই পুরসভার কর্মীদের। কর্মীরা বিস্ময়ের সঙ্গে কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ ও চলে গেলে বাড়িতে ভাতের হাড়ি যে চড়বে না। ‘তার এই কথায় হতস্তম্ভ কর্মীরা। তাদের মুখে একটাও টু শব্দ নেই।
এই ঘটনার সাক্ষী হল রিষড়া পুরসভা। যদিও করোনাকালে এমন আরও ঘটনার সাক্ষী রয়েছেন পুরসভার কর্মীরা। তারা দীর্ঘক্ষন বাড়ির গৃহস্থকে বোঝানোর চেষ্টাকরেন যে তারা গৃহবধু বাদে অন্য কাউকে নিতে নারাজ। কিন্তু সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, গৃহবধুকে নিয়ে যাওয়া যাবে না। তার বদলে অন্য কাউকে নিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত হুলুস্থুলু কান্ড বেধে যায়। বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে একরকম ছিনিয়েই তারা গৃহবধুকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
ঘটনার সাক্ষী পুরসভার করোনাবিষয়ক নোডাল অফিসার অসিতাভ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ বিষয়টা ভোলার নয়। বাড়িতে হাড়ি চড়বে না বলে তারা বাড়ির বউকে যেতে দিতে চাইছেন না। কিন্তু তারা জানেননা একজন করোনা আক্রান্তকে বাড়িতে রাখা কতটা বিপজ্জনক। রান্নাকে করবে সেই চিন্তায় হয়ত সেই কথা তাদের মাথা থেকে উড়ে গেছে।’
অবশ্য এমন উদাহরন পুরোনো কিছু নয়। করোনা আক্রান্তদের সামলাতে রীতিমতো ঝক্কি নিতে হয় পুরসভার কর্মীদের। একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়ি থেকে পালিয়ে
গিয়েছিলেন। পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও হদিশ মিলছিল না। অবশেষে ময়দানে নামতে হয় পুলিশকেই। বাড়ির লোকজনকে গ্রেপ্তার করার ভয় দেখাতেই ফিরে আসে আক্রান্ত ব্যক্তি। আর এরপর আক্রান্ত স্ত্রীকেই বাড়িতে আটকে রাখার প্রস্তাব। সত্যিই ভোলা যায় না এইসব ঘটনাগুলি।