সিজার করতে গিয়ে ডাক্তারের হাতে বাচ্চার কলিজা!
সিজার করতে গিয়ে ডাক্তারের হাতে প্রান দিতে হয় নবজাতকের! আসুন সিজার থেকে আমরা দুরে থাকি। হাসপাতালে চলে এরকম মারন ব্যবসা অথচ তা দেখার মত কেউ নেই।
সন্তান জন্মদান হল প্রকৃতির স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। মেয়েরা কমবেশী ২৭০ দিন গর্ভধারণের পর যোনিপথ থেকে সন্তান প্রসব করেন। একে স্বাভাবিক ডেলিভারি বলে। ১০ – ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ডেলিভারী সম্ভব নয় সেক্ষেত্রে জরায়ু কেটে নবজাতককে বের করা হয় তাকে সিজারিয়ান ডেলিভারি বা সি সেকশন বলে।
অবশ্য এখানে কোন দ্বিমত নেই যে সিজারিয়ান ডেলিভারী করতেই হবে। কখন সি সেকশন করা হবে তা ষ্পষ্ট্যভাবে চিকিৎসা শাস্ত্রে বলা আছে। এমনকি সময়মত সি সেকশন না করতে পারলে মা ও নবজাতকের মৃত্যু হতে পারে।
আর এই আলোচনার উদ্বেগ হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত সি সেকশন নিয়ে। বছরের পর বছর বছর সি সেকশনের হার উধ্বমুখী। ২০০৪ এ ৫%, ২০১১ তে ৯%, ২০১৩ তে ১৩%, ২০১৭ তে ২৩%। ক্রমবর্ধমান সি সেকশনের হার মাতৃমৃত্যু তো নয়ই জনজাতির স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। অতিরিক্ত সি সেকশন শারীরিক মানসিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক পাশ্বপ্রতিক্রিয়া রাখে।
আরো চিন্তার বিষয় হল প্রাইভেট ক্লিনিকে সি সেকশনের হার ৮০% যেখানে সরকারি হাসপাতালে এই হার ৩৮%। এছাড়াও ধনী প্রসুতিদের মধ্যে সি সেকশনের প্রবনতা ক্রমশ বাড়ছে।
সি সেকশন একটি বিশেষ পদ্ধতি যাতে অনেক পাশ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। অপারেশন চলাকালীন বা পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে। সম্পূর্ন বা আংশিক অজ্ঞান করে অপারেশন করা হয়। এনেস্থেশিয়া সংক্রান্ত অসুবিধাও হতে পারে। এছাড়া অপারেশনের পর প্রসুতি মানসিক চাপ, অতৃপ্তি, বাচ্চার সঙ্গে দুর্বল সম্পর্কের সমস্যায় ভোগেন। এছাড়াও অতিরিক্ত রক্তক্ষরন, গর্ভপাত, গর্ভফুলের অবস্থান সংক্রান্ত সমস্যাও দেখা যায়।
অনেক প্রসুতিবিদরা বলেন আজকালকাল প্রসুতিরা সি সেকশনেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাদের হয়ত স্বাভাবিক ডেলিভারী হওয়ার যন্ত্রনাটা সহ্য করার মানসিক অবস্থা নেই। তাদের অধিকাংশ দাবি, আমার শরীর আমার ইচ্ছা আমার সিদ্ধান্ত কীভাবে ডেলিভারী করাবো। কিন্তু এক্ষেত্রে জীবন মৃত্যর প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
এখনও পৃথিবীর বহু দেশে রোগীকে সমস্যা সম্পূর্নভাবে না জানিয়ে বা আংশিকভাবে জানিয়ে রোগীর সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার মত ঘটনা পৃথিবীর বহুষদেশেই ঘটে থাকে।
তাই অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন বন্ধ করতে হলে যে নিয়মগুলি মানতে হবে –
১, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়কে চিকিৎসা পরিষেবা দানের বিষয়ে কঠোর হতে হবে।
২, সুনির্দিষ্ট বিধি মেনে হয় হাসপাতাল ক্লিনিকগুলিকে লাইসেন্স দিতে হবে এবং শিক্রিত ও প্রশিক্ষিত লোক ছাড়া অন্য কারোর অপারেশন বন্ধ করতে হবে।
৩, প্রসুতিবিদদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, সঠিকভাবে জবাবদিহি ও পুনঃপ্রশিক্ষনের ব্যবস্থা রাকতে হবে
৪, সি সেকশনের প্রয়োজনীয়তা ও ক্ষতিকর দিক জনসাধারণের সামনে তুলে ধরে বৌঝাতে হবে।