দুঃস্থ ঘরের কিশোর হতে চায় পুলিশ, সাহায্যে এগিয়ে এলেন পুলিশ অফিসার
মনে পড়ে বিদ্যাসাগরের কথা!
রাস্তার বাতির নিচে বা কখনও এটিএমের আলোয় জিপের সামনের ইঞ্জিনে উপর খাতা পেন নিয়ে চলে নিত্যদিনের পড়াশুনা। আর পড়াচ্চেন একজন পুলিশকর্মী। বেশ মাস দু এক ধরে এরকমই দৃশ্য দেখে আসছেন সাধারন লোকজন। কিন্তু ব্যাপারটা কী? অতি দুঃস্থ পরিবার থেকে উঠে আসা রাজ নামের ছেলেটি ভবিষ্যতে পুলিশ অফিসার হতে চায়। কিন্তু পারিবারিক অবস্থা খুবই খারাপ। তাই অনুরোধ করে এক পুলিশকর্মীকেই বানিয়ে নিয়েছে তার শিক্ষক! কিন্তু কে এই পুলিশ অফিসার? তিনি পলাশিয়া থানার স্টেশন হাউস অফিসার বিনোদ দীক্ষিত। আর তিনি এখন রাজের ‘মাস্টারমশাই’, সম্মানীয় চাচাজি। প্রতিদিন নিয়ম করে পড়াশোনা করান বিনোদ। আর এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ বহু মানুষ। অনেকে যেমন বিনোদের প্রশংসা করছেন, তেমনি প্রশংসা করছেন রাজের অধ্যাবসায়কে।
মাস দুয়েক আগে লকডাউনের রাতে জিপ নিয়ে টহল দেওয়ার সময় রাজের সঙ্গে দেখা হয় বিনোদের। কথা বলে তিনি বুঝতে পারেন দরিদ্র ঘরের ছেলে রাজ। বাবা রাজমিস্ত্রী, দাদু ছোট একটি দোকান চালান। আর্থিক অনটনের সংসার তার। পড়াশোনা করার জন্য টাকা পয়সা নেই ঠিকই, কিন্তু আছে অদম্য ইচ্ছা।
রাজ বলে, করোনার সময় সে দেখেছে রাস্তায় পুলিশকর্মীরা সাধারন মানুষের জন্য কত কাজ করছে।আর তাতেই অনুপ্রানিত রাজ। বড় হয়ে সে পুলিশ অফিসার হতে চায়। তার এই ইচ্ছে শুনেই তাকে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন বিনোদ।
কিন্তু কোথায় বসে পড়বেন? কখনও রাস্তার এটিএমের আলোয়, কখনও রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের বাতির আলোয় জিপের ইঞ্জিনের উপর খাতা পেন রেখে চলছে পড়াশোনা। রাতে অঙ্ক আর ইংলিশ করছে সে, চলছে পুলিশ অফিসার হওয়ার প্রস্তুতি।